শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা অফিস :
উপকূলের জেলে মৎস্যজীবিরা ভালো নেই। মাছ ধরা বন্ধ রেখে গত তিন যাবৎ ঘাটে নোঙ্গর করে আছে ফিশিংবোটবহর।
দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে দু,দফায় সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে ফিরে আসতে হয়েছে জেলেদের। ক্রমাগত লোকসানে পড়ে এখন দিশেহারা জেলে ও মহাজনরা। আবহাওয়া বিভাগ ৩নং সতর্ক সংকেত জারী রেখেছে।
শরণখোলা উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরে এখন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। উত্তাল সাগরে টিকতে না পেরে কয়েকশ ফিশিংবোট তিনদিন ধরে রায়েন্দা, মহিপুর, খেপুপাড়া, নিদ্রাসখিনা, পাথরঘাটাসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে আছে। দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে প্রথম দফায় ২৩ জুলাই মধ্যরাতে তাদের ফিশিংবোটবহর সাগরে মাছ ধরতে গিয়েই দুর্যোগের কবলে পড়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। আবহাওয়া ভালো হওয়ায় আবার সাগরে গিয়ে জাল ফেলতেই সাগরের অবস্থা আকষ্মিক খারাপ হয়ে যায়।
প্রবল ঢেউ ও ঝড়ো বাতাসে টিকতে না পেরে ফিশিংবোটবহর বুধবার থেকে উপকূলে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। ফলে জেলে ও ফিশিংবোট মালিকরা ক্রমাগত লোকসানে পড়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে আবুল হোসেন জানান।
শরণখোলা রাজৈর মৎস্যঘাটের আড়ৎদার কবীর হোসেন বলেন, সাগরে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় ফিশিংবোটবহর সাগরে না গিয়ে তিনদিন ধরে রায়েন্দা মৎস্যঘাটে নোঙর করে আছে। পাড়েরহাট মৎস্যবন্দরের আড়ৎদার আনোয়ার হোসেন বলেন, জেলে মৎস্যজীবিরা এখন ভালো নেই। একদিকে সরকারের মাছ ধরায় অবরোধ অপরদিকে সাগরে গিয়ে বার বার দুর্যোগের কবলে পড়ে মাছ ধরা বন্ধ রেখে জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে হচ্ছে।
বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ক্রমাগতভাবে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ছেন। জেলে মৎস্যজীবিরা ধার দেনা করে লাখ লাখ টাকা খরচ করে সাগরে বোট পাঠিয়ে মাছ ধরতে না পেরে লোকসান দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও শরণখোলার মৎস্য ব্যবসায়ী এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সাগরে গিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে দুইবার খালি বোট নিয়ে ফিরে এসেছেন। প্রতি বছর অবরোধ শেষে সাগরে গিয়েই আমাদের দেশীয় জেলেরা বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে। ভারতের সাথে মিল রেখে আমাদের দেশের সাগরে অবরোধ দিলে জেলেরা ভালভাবে মাছ ধরতে পারতো।এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।