নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আফসানা করিমের (রাচি) মৃত্যুর ঘটনায় ‘জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল পৌনে ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকটি ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে কোনও গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে পারছে না।
বর্তমানে ‘জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেডের’ অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘তারা নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করাসহ আট দফা দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের কর্মসূচি চলাকালে ক্যাম্পাসে কোনও ধরনের যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হবে না।’
এ সময় প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অনেককে ব্যক্তিগত গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে যেতে দেখা গেছে। এদিকে রিকশা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আমবাগন, ইসলামনগর ও গেরুয়া এলাকায় থাকা শিক্ষার্থীরা।
ইতিহাস ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মারজান বলেন, ‘ডেইরি গেইটে সকাল ৭টা থেকে ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন৷বাইরে থেকে মোটরচালিত কোনও গাড়ি তারা প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। ভেতরেও মোটরচালিত কোনও গাড়ি আজ চলছে না। দুপুরে জানাজা হবে। সে পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে৷’
ব্লকেড কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আদি বলেন, ‘প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল ক্যাম্পাসের মেডিক্যালে উপযুক্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করা। একজন শিক্ষার্থী যদি ক্যাম্পাসে আহত হন, তাকে ক্যাম্পাসের মেডিক্যালে নেওয়ার পর যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা উচিত। আফসানার ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। এটাকে প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবে দেখতে হবে। ক্যাম্পাসে শুধু রিকশা নয়, মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণের কোনও পদক্ষেপও নেই। নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আমরা জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছি।’
শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবি হলো– ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের যথাযথ বিচার করতে হবে; পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট, ফুটপাথ, ও স্পিড ব্রেকার স্থাপন করতে হবে এবং যানবাহন স্পিডমিটার বাস্তবায়ন করতে হবে; নিহতের পরিবারকে যথাযথ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; মেডিক্যাল সেন্টারের জরুরিসেবার মানোন্নয়ন করতে হবে; রেজিস্ট্রেশনবিহীন সব যানবাহন ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং রেজিস্ট্রেশন প্রদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে; সব রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণ ও রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করতে হবে; অদক্ষ নিরাপত্তাকর্মীদের প্রত্যাহার করতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করতে হবে।