বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক ও ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য সজীব তরফদারকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার (০৫ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট থেকে চাচা কামাল তরফদারকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাগেরহাট-রামপাল সড়ক দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। দুপুর ২ টার দিকে পার্শবর্তি গ্রাম মির্জাপুর আমতলা মসজিদের সামনে পৌছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার পথ গতিরোধ করে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। এসময় গুলিতে মোটরসাইকেলে থাকা সজিবের চাচা কামাল তরফদার(৫৫) গুরুত্বর আহত হয়। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত সাবেক ইউপি সদস্য সজীব তরফদার ডেমা গ্রামের মৃত সিদ্দিক তরফদারের ছেলে। মৃত্যুকালে সজিব মা, স্ত্রী ও ৫ বছরের একটি কন্যা সন্তান রেখে গেছেন।
সজীব তরফদার ডেমা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড থেকে ৩বার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি বুলেটের খোসা, একটি রামদাসহ কিছু আলামত জব্দ করেছে। স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা, এর পেছনে যারা রয়েছে তাদেরকে দ্রæত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
সজিবের বড় ভাই নাজমুল তরফদার বলেন, সজিব বাগেরহাট থেকে বাড়ি ফিরছিলো। সাথে চাচা ছিল। খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে দেখি আমার ভাইয়ের মাথায় ৪টি গুলি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকারীদের বিচার চাই। বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক বলেন, সজিব একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। সেকারণেও তার প্রতিপক্ষরা তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটাতে পারে। এটা পরিকল্পিত হত্যা দাবি করে অপরাধী ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রæত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এই নেতা।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ বলেন, ঘটনাস্থলে পাওয়া বুলেটের খোসা থেকে বোঝা যায় এটা শটগানের গুলি। ধারণা করছি শটগান দিয়ে গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা নিশ্চিত করতে একাধিক দল ছিল, হত্যাকারীরা মুখোশ পড়া ছিল। নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। খুব দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি। এদিকে সাবেক এই বিএনপি নেতার হত্যাকারীদের বিচার দাবি ও শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম ও সাবেক সভাপতি এম এ সালাম। অন্যদিকে এ হত্যাকান্ডের জন্য জামায়াত ইসলামী বাগেরহাট জেলা আমির মোঃ রেজাউল করিম , সাধারন সম্পাদক মোঃ ইউনুস আলীসহ দলীয় নেতৃবৃন্ধ অনুরুপ বিবৃতি প্রদান করেছেন।