নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে আবারও নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছে বিএনপি।
এক ঘণ্টার সংলাপ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচন করা অন্তর্বর্তী সরকারের এক নম্বর অগ্রাধিকার, এটি প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের জানিয়েছেন।
সরকারের সঙ্গে সংলাপের পর শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল চারটার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে ওই সংলাপে অংশ নিতে যমুনায় যায় বিএনপির ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল।
সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এক ঘণ্টা সময় ধরে আলোচনা করেন। প্রধান আলোচনা ছিল নির্বাচন–সংক্রান্ত এবং নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার ও কমিশন নিয়ে।
সংলাপে আবারও নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবি তুলে ধরার কথা উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি। কবে নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি।’
জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে দেওয়ার যে আইন করা হয়েছে বিগত সরকারের সময়ে, সেটিও বাতিল চেয়েছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলেন, বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি যাতে নির্বাচন সংস্কার কমিটিতে না থাকে, সেটিও তাঁরা চেয়েছেন। ফ্যাসিবাদের সময় গঠিত সব ইউনিয়ন পরিষদ বাতিলের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
বিএনপির মহাসচিব জানান, ২০১৪ সাল থেকে পরপর তিনটি বিতর্কিত ও ভুয়া নির্বাচন করেছে যেসব নির্বাচন কমিশন, সেই কমিশনগুলোর প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যদের আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন তাঁরা।
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিচারপতি খায়রুল হক নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করার মূল হোতা। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় দিয়ে এই বিচারপতি নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংসের মূল ভূমিকা পালন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে অনেকে দোসর হয়ে কাজ করেছে এবং লুটপাট ও মানুষের ওপর নির্যাতনে সহায়তা করেছে। এ ছাড়া গুম–খুন ও গণহত্যায় সহায়তাকারীদের অনেকেই এখনো নিজ নিজ জায়গায় বহাল আছে, অবিলম্বে তাদের সরিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সেসব পদে নিয়োগ করার দাবিও তাঁরা জানিয়েছেন।
সংলাপে অংশ নেওয়া বিএনপির অন্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান ও সালাহ উদ্দিন আহমেদ। এতে সরকারের দিক থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ, আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।