নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী ২০২৫ সালের ১ জুলাই বা তার পরে যারা চাকরিতে যোগদান করবেন, তাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ‘প্রত্যয় স্কিমে’ অংশ নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রোববার (১৪ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, দেশের সর্বস্তরের জনগণকে একটি টেকসই পেনশন ব্যবস্থায় আনার লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর আওতায়, ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন। সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মচারীরাও সরকারি কর্মচারীদের মতো, যারা নতুন কর্মচারী হিসেবে ২০২৫ সালের ১ জুলাই বা তৎপরবর্তী সময়ে চাকরিতে যোগদান করবেন, তারা বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আসবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বর্তমানে সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে আন্দোলন করছেন। এর মধ্যে নতুন চাকরিতে যারা যোগদান করবেন তাদের পেনশন স্কিমে যোগদানের সময় ২০২৫ সালের ১ জুলাই নির্ধারণ করার পাশাপাশি ‘প্রত্যয় স্কিমে’ অংশ নেওয়া বাধ্যতামূলক ঘোষণা দেওয়া হলো।
এর আগে, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাকে আরও ব্যাপক আকার দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় এনে তাদের বৃদ্ধকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।
এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় তিন হাজার ৮০২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকল্প সহায়তা দেবে ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আর বাকি ৭৫ মিলিয়ন সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হবে বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটির প্রিলিমিনারি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (পিডিপিপি) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। সম্প্রতি ইআরডি থেকে এক চিঠির মাধ্যমে এডিবির সহযোগিতার কথা জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় এনে তাদের বৃদ্ধকালীন জীবন-জীবিকার সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ পাশ করেছে। ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল এ আইনের আওতায় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ (এনপিএ) প্রতিষ্ঠা করার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী একই বছর ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। প্রাথমিকভাবে সর্বজনীন পেনশনের ৪টি স্কিম যথাক্রমে ‘প্রগতি’, ‘সমতা’, ‘প্রবাস’, ‘সুরক্ষা’ ও পরবর্তীতে ‘প্রত্যয়’ স্কিম চালু করা হয়।