বিনোদন প্রতিবেদক:
শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের’ বিরুদ্ধে শাহবাগে পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। তবে এ পাল্টা কর্মসূচির কোনো বৈধ কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না দেশের প্রখ্যাত অভিনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহেল রানা।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘কোটা সংস্কারের আন্দোলনের’ বিষয়ে সময়ের বিশেষ আড্ডায় নিজের মতামত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেন একটি দেশের জন্য, একটি স্বাধীনতার পতাকার জন্য; আর একটি বাঙালি জাতির পরিচয় পাবার জন্য। যুদ্ধ শেষেই আমরা সেটা পেয়েছি। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের আর কিছু চাওয়ার নেই বলে আমি মনে করি।
সোহেল রানা আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা সিস্টেম চালু রাখাটা আমি ভালো চোখে দেখি। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের জন্য কোটা সিস্টেম চালু রাখা দোষের নয়। সেটাও ঠিক আছে। কারণ এটা একটি ভালো প্রচেষ্টা আমি বলব। কিন্তু আজ ৫৩ বছর দেশ স্বাধীন হয়েছে। এ সময়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের বয়স নেই সরকারি চাকরির জন্য। তাহলে কেন এখনও সে কোটা চালু রাখা প্রয়োজন আছে, আমি তা এখনও বুঝি না।
এ সময় কোটাপ্রথা চালু রাখার পক্ষে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে মত পোষণ করেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, এত সময় পরেও কোটা প্রথা চালু রাখা মানে নিজস্ব কোনো স্বার্থ সেখানে লুকিয়ে আছে। কারণ কোনো হিসাবেই মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানের জন্য এ কোটা প্রথা কাজ করে না। ক্ষোভ প্রকাশ করে সোহেল রানা বলেন, এখন সরকার একটি ঘটনা ঢাকার জন্য আরেকটি ঘটনার জন্ম দিচ্ছে, যা দুঃখজনক। প্রথমে রাসেল ভাইপার দিয়ে ছাগলকাণ্ড ঢাকল। এরপর বেনজীরের ঘটনা ড্রাইভার ঢাকল। আবার ড্রাইভারের কাহিনি ঢাকার জন্য নতুন কোনো ঘটনা সামনে আসবে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এভাবেই চলছে। কোটাপ্রথা রাখার পরিবর্তে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়পত্র কার্ডের সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরেন অভিনেতা। তিনি বলেন, যুদ্ধের ৫০ বছর পর একটা মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র ও আইডেনটিটি কার্ড পেয়েছি। সে আইডেনটিটি কার্ডের কোনো দামই নেই। পৃথিবীতে এ রকম জঘন্য আইডেনটিটি কার্ড আর একটিও হতে পারে না। কারণ এ কার্ড মুক্তিযোদ্ধাকে ভিআইপিও বানাচ্ছে না, সিআইপিও বানাচ্ছে না। ফ্রি সরকারি জিনিসপত্র পাওয়ার জন্যও কাজে লাগছে না। বিনা পয়সায় হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসা পাওয়ারও নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। অথচ মুখে বলা হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান।