শরীয়তপুর সংবাদদাতা:
শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে পুলিশ বাবুল বেপারী (৪০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে। হাসপাতালে ভর্তির পর তিনি নিখোঁজ ছিলেন বলে জানিয়েছে স্বজন এবং পাশের শয্যায় থাকা অন্য রোগীরা।
শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে সদর হাসপাতালের তৃতীয় তলার মেডিসিন ওয়ার্ডের শৌচাগার থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত বাবুল বেপারী বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার পূর্ব তয়কা এলাকার আলী বেপারীর ছেলে।
রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন বাবুল বেপারী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বৃদ্ধা মা রোকেয়া বেগম। মধ্যরাতে মা রোকেয়া বেগম ঘুমিয়ে পড়লে ঘুম থেকে উঠে আর শয্যায় দেখতে পাননি ছেলেকে। এরপর তিনি তার ছেলেকে হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করেন এবং একপর্যায়ে বিষয়টি নার্সদের জানান। তবে তার কোনো খোঁজ না পেলে শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়ি চলে যান রোকেয়া বেগম। পরে বিকেলে ফের হাসপাতালে এসে ছেলের খোঁজ করেন।
শনিবার সকালে অন্য রোগীরা শৌচাগারে গেলে বাবুল বেপারীকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায়। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে।
বাবুল বেপারীর ভাতিজি হেনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার চাচ্চু বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তিনি বাথরুমে গিয়ে যদি মারাও যান, তাহলে এই দুইদিন বাথরুম পরিষ্কার করা হয়নি। বাথরুম পরিষ্কার করলে ঠিকই আমার চাচ্চুকে আগে খুঁজে পাওয়া যেতো। তারা চাচ্চুকে না খুঁজে উল্টো রোগীকে পাওয়া যায়নি বলে আমার দাদিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাবুল বেপারী নামের একজন রোগী শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছিল। রোগীটা শারীরিকভাবেও অত্যন্ত দুর্বল ছিল। কখন উনি তার বেড থেকে বেরিয়ে যায় কেউ খেয়াল রাখেনি। এ ঘটনার পেছনে আমাদের কোনো গাফিলতি রয়েছে সেটা খতিয়ে দেখার জন্য আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব বলেন, ‘পুলিশ খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।