নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। এছাড়াও চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার (১০ জুলাই) বেইজিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এ তথ্য জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, চীনের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও বিস্তৃত হবে বলে চীনের প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চীনের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে জাতির পিতার চীন সফর এবং এরপর শেখ হাসিনার ছয়বার চীন সফরের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের গভীর সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে।
চীনের প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে চীন অত্যন্ত মূল্য দেয়। পৃথিবীর যে কয়েকটি দেশে চীন সবচেয়ে বেশি প্রকৌশল সহায়তা দেয়, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
হাছান মাহমুদ জানান, আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্যদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের যে বাণিজ্য ঘাটতি আছে, তা কমানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেক্ষেত্রে চীনের প্রধানমন্ত্রীও বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানির কথা বলেছেন। তারা যে আম আমদানি করতে যাচ্ছেন সেটি বলেছেন, কাঁঠাল ও পেয়ারা এ দুটি ফলও আমদানির বিষয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, ওষুধ, সিরামিকসহ অন্যান্য পণ্যও যাতে আমদানি হয়, তার ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বারোপ করেছেন। তারাও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে আরও অধিক পরিমাণ পণ্য আমদানি করা হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, চীনের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বৈঠকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং মানবতার কল্যাণে দুই দেশ এক সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ ব্যক্ত করেছে দুই প্রধানমন্ত্রী।বাংলাদেশে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক করার বিষয়ে সহায়তায় আগ্রহ প্রকাশ করেন চীনের প্রধানমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বঙ্গবন্ধু শিল্প পার্কে চীনা বিনিয়োগ আহ্বান করেছেন। একইসঙ্গে চীনের জন্য আলাদা একটি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণের জায়গা বরাদ্দ রাখার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন যেসব সুবিধা পাচ্ছে, সেগুলো যাতে ২০৩২, অন্তত ২০২৯ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে চীনের সহায়তা কামনা করেছেন। এ বিষয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।