শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা অফিস :
সুন্দরবনে চলছে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা। বন্ধ রয়েছে মাছ শিকার ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচল। ১জুন থেকে আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে জেলেদের মাছধরা ও পর্যটকদের প্রবেশে এ নিষেধজ্ঞা দিয়েছে বনবিভাগ।
পুর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন , ১ জুন থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত এই তিন মাস মাছের প্রজনন মৌসুম। তাই এই তিনমাস মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফলে দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকবে সুন্দরবন প্রবেশের সকল পারমিট। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্বের ন্যায় আবার সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটকদের জন্য পারমিট দেয়া শুরু হবে।
জেলেরা জানান, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকাসহ ২৫ ফুটের কম প্রসস্ত খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। নিষিদ্ধ এসব নদী-খাল ছাড়া সারা বছর প্রতি গোনে (প্রতি মাসের আমাবশ্বা ও পূর্ণিমার সময়) উপকুলীয় এলাকার হাজার পারমিটধারী জেলে মৎস্য আহরন করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। বর্তমানে ঘুর্ণিঝড় রেমালের কারনে সুন্দরবন সংলগ্ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তার উপর মৎস্য আহরন তিন মাস বন্ধ থাকলে জেলেদের জীবন-জীবিকা আরো কঠিন হয়ে পড়বে।
শরণখোলার মৎস্য ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ও জালাল মোল্লা জানান, সুন্দরবনের জেলেদের মাছ ধরা ছাড়া এবার আর কোন কাজ কারার সুযোগ নেই। এবছর তিনমাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলে জেলেরা ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকবে।
উপজেলার বকুলতলা গ্রামের নুর ইসলাম মুন্সি, সোনাতলা গ্রামের আসাদুল মাতুব্বর, খুড়িয়াখালী গ্রামের জেলে হাবিব হাওলাদার ও জামাল হাওলাদার জানান, আমরা ৩০/৪০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। এখন মাছ ধরা বন্ধ করে দিলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। আমাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করে দিলে আমারা আর সুন্দরবনে যাবো না।
এ ব্যাপারে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন , জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে মৎস্য প্রজননের জন্য উপযুক্ত মৌসুম। এই সময় সাধারণত সকল মাছে ডিম ছাড়ে। সেজন্য প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও ১ জুন থেকে ৩০ আগষ্ট পর্যন্ত তিনমাস সকল প্রকার মৎস্য আহরন বন্ধ রয়েছে ।