টাঙ্গাইল সংবাদদাতা :
অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে ফরম পূরণে জালিয়াতি, দুর্নীতি, অনিয়ম ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নিকরাইল শমসের ফকির ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেনসহ জড়িত অন্যান্য শিক্ষকদের দ্রুত বহিষ্কার এবং চলমান এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার এক দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ভুক্তভোগী ২২ শিক্ষার্থী ও তাদের স্বজনসহ স্থানীয় লোকজন।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষার দিনেও নিকরাইল শমসের ফকির ডিগ্রি কলেজের ২২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধনটি নিকরাইল পলশিয়া রানী দিনমনী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে শুরু হয়। পরে কলেজে গিয়ে ইট-পাটকেল ছোঁড়াছুড়ি ও কলেজে হামলা চালায় শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা জানান, মুহুর্তেই চোখের পানিতে নিজের ও পরিবারের স্বপ্নগুলো ভেসে যাচ্ছে। কলেজের দুর্নীতিবাজ শিক্ষক বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেন আমাদের ২২ শিক্ষার্থীর থেকে অতিরিক্ত অর্থ নিয়েও ফরম পূরণ করে দেওয়ার নামে প্রতারণা করেছেন এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য আমরা পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত। আমরা পরীক্ষা দিতে চাই, পরীক্ষার সুযোগ করে দিতে হবে এবং প্রতারক লোকমানের বহিষ্কার দাবি জানাচ্ছি।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, ২২ জন শিক্ষার্থী চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারায় মঙ্গলবার সকালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। অবৈধভাবে ফরম পূরণের কারণে তাদের ফরম পূরণের আবেদনটি বাতিল করে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কলেজ পরিচালনা কমিটি। পরে সেটি তদন্ত করে উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।
গত ২৯ জুন কলেজে প্রবেশপত্র আনতে গিয়ে পায়নি ওই ২২ শিক্ষার্থী। পরে কলেজ থেকে তাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয় বলে জানান তারা। রোববার (৩০ জুন) সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে নিকরাইল পলশিয়া রানী দীনমনি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে গেটে তালা ও বিক্ষোভ করে পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুর চালায়। এসময় কর্তব্যরত পুলিশের সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি প্রশাসন সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে কেন্দ্র ত্যাগ করে। তবে বিনা- কারণে পুলিশ শিক্ষার্থীদের মারপিট করেছে বলে অভিযোগ তাদের। এ বছর নিকরাইল শমশের ফকির ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৭১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। কিন্তু অতিরিক্ত অর্থও দিয়ে ওই কলেজের ২২ শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারেনি।